একটি ছাগলের ওজন ৮০ কেজি। দাম প্রায় লাখ টাকা! কাশমেরী জাতের ছাগল পালন করে স্থানীয়দের চমকে দিয়েছেন রতন চক্রবর্তী (৩৪)। জেলার ডোমার উপজেলার হরিণচড়া ইউনিয়নে তিনি ক্ষুদ্র পরিসরে ছাগলের খামার গড়ে তুলেছেন। কাশমেরী ছাগল উচ্চতায় বড় এবং দেখতে সুন্দর হওয়ায় তার এই উদ্যোগ এলাকায় সাড়া ফেলেছে।

রতন চক্রবর্তী জানান, তিনি আগে থেকেই বিভিন্ন জাতের ছাগল পালন করেন। প্রায় আট বছর আগে সৈয়দপুর ঢেলাপীর হাটে ৮০ কেজি ওজনের একটি ছাগল তার নজর কাড়ে। টাকার অভাবে সেদিন তিনি ছাগলটি কিনতে পারেননি। বাড়ি ফিরে এসে খামারের ৬টি ছাগল বিক্রি করে ৫৫ হাজার টাকা হাতে পান। এরপর আরো ৪০ হাজার টাকা ধার করে তিনি সেই ছাগল মালিকের বাড়ি যান। কিন্তু তার কাঙ্ক্ষিত ছাগল এর আগেই বিক্রি হয়ে যায়। সেদিন রতন ৩৮ হাজার টাকা দিয়ে কাশমেরী জাতের অন্য একটি ছাগল কিনে আনেন। এরপর তিনি খামারের অন্য জাতের ছাগল একে একে বিক্রি করে কাশমেরী জাতের ছাগল বাড়াতে থাকেন। শখের বশে শুরু করলেও এখন তিনি বাণিজ্যিকভাবেই ছাগল পালন করছেন। গত কোরবানি ঈদে রতন এক লাখ ৬৫ হাজার টাকায় দুটি ছাগল বিক্রি করেছেন। ক্রেতা ঢাকা থেকে এসে ছাগল কিনে নিয়ে গেছেন।

এবারও ঈদে ছাগল বিক্রির প্রস্তুতি নিয়েছেন জানিয়ে রতন বলেন, ‘দুই বছর বয়সের একটি ছাগলের জন্য প্রতিদিন প্রায় তিনশ টাকার খাবার দিতে হয়। ভুসি, ভুট্টাগাছ ছাগলগুলোর খুব পছন্দ। তবে এরা খুব আয়েশি, চৌকির উপর আরাম করে ঘুমায়। একটুতেই আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে। যে কারণে সব সময় বেঁধে রাখতে হয়। ছাড়া পেলেই ক্ষেত নষ্ট করে।’ কাশমেরী জাতের ছাগল দেশজুড়ে ছড়িয়ে দিতে চান জানিয়ে রতন বলেন, ‘এ জাতের ছাগল পালনে বিশেষ কোনো ভাবনা নেই। জ্বর ও ক্ষুধামন্দা বেশি হয়। ওষুধ দিলে অল্প সময়ের মধ্যেই সুস্থ হয়ে যায়।’ হরিণচড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আজিজুল ইসলাম বলেন, ‘এতো বড় ছাগল আগে কখনো দেখি নাই! ছাগলগুলো দেখতে অনেকেই রতনের বাড়ি যায়। তার দেখাদেখি অনেকেই এই জাতের ছাগল পালনে আগ্রহী হয়ে উঠেছে।’